স্বামী-স্ত্রীর কাছে প্রিয় হবেন যেভাবে
বর্তমানে সম্পর্কগুলো যেমন সহজে গড়ে ওঠে, তেমন খুব সহজে ভেঙ্গে যাচ্ছে। অনেক সময় অনেক ছোট ছোট বিষয়ই আমাদের একটুই অসতর্কতার কারণে বড় হয়ে ওঠে এবং যার পরিণতিতে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে একটি সুন্দর সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়।
তাই সম্পর্ক সুন্দর রাখার ব্যাপারে আমাদের প্রত্যেকের সচেতন হওয়া জরুরি। কারণ এটা বাজারে কিনতে পাওয়া কোনো সৌখিন জিনিস নয়। দুজনেরই দায়িত্ব সম্পর্ক সুন্দর রাখতে কিছু যত্ন আত্তি। নিচে কিছু বিষয় মাথায় রাখলে সহজেই সম্পর্ক সুন্দর রাখা সহজ হবে।
সম্পর্ক সুন্দর রাখার উপায়
জোর করে পরিবর্তন করার চেষ্টা করবেন না: আপনার সঙ্গী যেমন তাকে আপনি তেমনিভাবেই পছন্দ করেছিলেন। তাই তাকে আমূল বদলাতে চেষ্টা করবেন না। কারো সাথে তুলনা দিয়ে বদলাতে বলবেন না। এতে আপনার সঙ্গীর মনে হীনমন্যতা তৈরী হবে। আবার হয়তো একদিন তিনি বদলে যাবেন কিন্তু সেদিন হয়তো আপনার প্রয়োজনও তার কাছে ফুরিয়ে যাবে।
মনোযোগ দিয়ে সঙ্গীর কথা শুনুন: আপনার সঙ্গীর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। এতে তার অভিযোগ, ভালোলাগা, মানসিকতা, প্রত্যাশা সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারবেন আপনি। আর সেই সাথে আপনাদের সম্পর্কও মজবুত হবে।
সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তিকে টানবেন না: অনেক সময় একটি সম্পর্ক ভেঙ্গে যাবার জন্যে একজন বাইরের মানুষই যথেষ্ট। তাই চেষ্টা করুণ আপনাদের সম্পর্কের ব্যক্তিগত ব্যাপারে যতটা সম্ভব গোপনীয়তা বজায় রাখতে। ঝগড়া-ঝাঁটি হলেই বাইরের কোন বন্ধুকে সমঝোতার জন্যে ডেকে আনবেন না। নিজেরা মেটান।
পারিবারিক ব্যাপারে সতর্ক থাকুন: শুধু নিজের পরিবারই নয়, গুরুত্ব দিন সঙ্গীর পরিবারকেও। নিজে যথেষ্ট পরিমাণে সংযুক্ত না থাকতে পারলেও খেয়াল রাখুন আপনার কারণে যাতে সঙ্গীর সাথে তার পরিবারের কোন দূরত্ব তৈরী না হয়।
ঝগড়া দীর্ঘমেয়াদী হতে দেবেন না: ঝগড়া একটি সম্পর্কে অনিবার্য। কিন্তু তাই বলে দীর্ঘদিন যাতে সেটি না গড়ায়। অল্প সময়ের ঝগড়া সম্পর্ককে মজবুত করে কিন্তু দীর্ঘমেয়াদের দূরত্ব (কথা বন্ধ রাখা, দেখা না করা) একটি সম্পর্ককে বিচ্ছেদের দিকে নিয়ে যায়।
সঙ্গীকে তার বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতে দিন: আপনার সঙ্গী আপনার সাথে সময় কাটাবেন স্বাভাবিক। কিন্তু তাকে তার জগত থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবেন না। সপ্তাহে অন্তত একটি দিন তাকে তার বন্ধুদের সাথে আলাদা সময় কাটাতে দিন। নিজেও নিজের বন্ধুদের সাথে সময় কাটান। আপনি তার সাথে সব সময় আঠার মত লেগে থাকলে তিনি অস্বস্তি বোধ করবেন।
বিপরীত লিঙ্গের বন্ধুদের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না: সঙ্গীর বিপরীত লিঙ্গের বন্ধুদের ব্যাপারে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না। আপনার সঙ্গীকে অন্য কারো ভালো লাগতেই পারে কিন্তু তিনি যদি দুর্বল হয়ে না থাকেন, তবে অন্য কারো প্রত্যাশার শাস্তি যাতে আপনার কাছের মানুষটি আপনার কাছ থেকে না পান। বন্ধুদেরকে লিঙ্গের বিচারে না দেখে বন্ধু হিসেবেই দেখুন।
অতীতের সম্পর্ক নিয়ে খোঁচাবেন না: প্রত্যেকের জীবনেই একটি অতীত থাকে। হয়তো আপনি আপনার সঙ্গীর প্রথম প্রেম নন, কিন্তু তাই বলে কখনোই তার প্রথম প্রেম নিয়ে তাকে অযথা খোঁচাবেন না বা নিজের প্রথম ভালোবাসা নিয়ে ঝগড়া বিবাদের সময়েও তার সাথে তুলনা দিয়ে কথা বলবেন না। এতে তিনি যেমন বিরক্ত হবেন তেমনি আপনার মাঝেই নিরাপত্তাহীনতা নিজের অবচেতনেই তৈরী হবে।
অধিকার নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে ছাড় দিন: প্রত্যেকেই চান, তার সঙ্গী সবার আগে, সবকিছুর আগে, তাকেই প্রাধান্য দিক। কিন্তু তাই বলে আপনার সঙ্গী যদি মাঝে মাঝে তার অন্য কোন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তবে সেটি নিয়ে ঝগড়া ঝাঁটি না করে বোঝার চেষ্টা করুন।
ব্যক্তিগত জিনিসে হাত দেবেন না: আপনার সঙ্গীর ব্যক্তিগত ডায়েরী, মেইল, এসএমএস তার অনুমতি ছাড়া ঘাঁটবেন না। এতে আপনি তাকে ভুল বুঝতে পারেন। আর প্রত্যেকের একটি নিজস্ব জগত থাকে যা একান্তই তার। তার গোপন জিনিসের গোপনীয়তা বজায় রাখতে তাকে আপনিও সাহায্য করুন।
যান্ত্রিক পৃথিবীতে মানবিক সম্পর্কগুলো ধরে রাখা দিন দিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তাই যত্ন নিন আপনার সম্পর্কের। আর যদি যত্ন না নেওয়া হোয় এই সম্পর্কের তবে ফাটল ধরতে পারে এই সম্পর্কে।