কালোজিরা খাওয়ার সঠিক নিয়ম
নানাবিধ ক্ষেত্রে, বিশেষ করে বিভিন্ন রোগব্যাধি থেকে মুক্তি
পেতে কালোজিরা বা কালোজিরার তেল ব্যবহার করা হয়ে
থাকে। কিন্তু আমরা অনেকে সঠিক নিয়ম জানি না। ফলে
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সুফল পাওয়া যায় না।
কালোজিরা বা কালোজিরার তেল ব্যবহারের সঠিক নিয়ম
মাথা ব্যথা নিরাময়েঃ হঠাৎ মাথা ব্যথা হলে ১/২ চা চামচ কালোজিরার তেল মাথায় ভালোভাবে মালিশ করতে হবে। এবং এক চা চামচ কালোজিরার তেল সমপরিমাণ মধুসহ দিনে তিনবার করে খেতে
হবে। এটা ২/৩ সপ্তাহ খেলে ভাল হবে। এছাড়া মাথা ব্যথায় কপালের উভয় চিবুকে ও কানের চারিপাশে প্রতিদিন ৩/৪ বার কালোজিরা তেল মালিশ করলে উপকার পাওয়া যাবে।
সর্দি সারাতেঃ এক চা চামচ কালোজিরার তেল সমপরিমাণ মধু বা এক কাপ রঙ চায়ের সাথে মিশিয়ে দৈনিক ৩ বার খেতে হবে এবং রোগ সেরে না যাওয়া পর্যন্ত মাথায় ও ঘাড়ে মালিশ করতে হবে। এছাড়া এক চা-চামচ কালোজিরার সাথে তিন চা-চামচ মধু ও দুই চা চামচ তুলসী পাতার রস মিশিয়ে খেলে জ্বর-সর্দি-কাশি দূর হবে। সর্দি বসে গেলে কালোজিরা বেটে কপালে প্রলেপ দিন। একই সাথে পাতলা পরিষ্কার কাপড়ে কালোজিরা বেঁধে শুকতে হবে,
শ্লেষ্মা তরল হয়ে ঝরে পড়বে। আরো দ্রুত ফল পেতে বুকে ও পিঠে কালোজিরার তেল মালিশ করতে হবে।
হাঁপানি রোগ সারাতেঃ প্রতিদিন কালোজিরার ভর্তা খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। কালোজিরা হাঁপানি বা শ্বাস কষ্টজনিত সমস্যা উপশম করবে। এছাড়া এক কাপ চা-চামচ কালোজিরার তেল,
এক কাপ দুধ বা রঙ চায়ের সাথে দৈনিক ৩ বার করে নিয়মিত খেলেও অনেক উপকার পাবেন।
ডায়বেটিক নিয়ন্ত্রণেঃ এক চিমটি পরিমাণ কালোজিরা এক গ্লাস পানির সাথে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে থাকলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে। এছাড়া এক কাপ চা-চামচ কালোজিরার তেল, এক কাপ রঙ চা বা গরম ভাতের সাথে মিশিয়ে দৈনিক ২ বার করে নিয়মিত খেলে একশত ভাগ ডায়বেটিক নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
চর্মরোগ সারাতেঃ যেখানে চর্ম রোগ সেই আক্রান্ত স্থানে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে তাতে কালোজিরার তেল মালিশ করতে হবে। এক চা-চামচ কাঁচা হলুদের রসের সাথে সমপরিমাণ কালোজিরার তেল, সমপরিমান মধু বা এক কাপ রঙ চায়ের সাথে দৈনিক ৩বার খেতেও হবে এটা ২/৩ সপ্তাহ খেতে হবে।
যৌনশক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রেঃ এক চা-চামচ মাখন, এক চা-চামচ জয়তুনের তেল সমপরিমাণ কালোজিরার তেল ও মধুসহ দৈনিক ৩ বার ৪/৫ সপ্তাহ ধরে খেলে অনেক উপকার হবে। তবে পুরানো কালোজিরা তেল স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
নারীদের অনিয়মিত মাসিক সারাতেঃ এক কাপ কাঁচা হলুদের রস বা সমপরিমাণ আতপ চাল ধোয়া পানির সাথে এক কাপ চা-চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে দৈনিক ৩ বার করে নিয়মিত খেতে হবে। তাহলে আরামে নিয়মিত মাসিক সারাতে পারবেন।
বাতের ব্যথা দূরীকরণেঃ বাতের ব্যথা হলে সেখানে ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে তাতে কালোজিরার তেল মালিশ করতে হবে। এক চা-চামচ কাঁচা হলুদের রসের সাথে সমপরিমাণ কালোজিরার তেল
সমপরিমান মধু বা এক কাপ রঙ চায়ের সাথে দৈনিক ৩ বার খেতে হবে এটা ২/ ৩ সপ্তাহ খেতে হবে। তাহলে ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে।
স্মরণ শক্তিবৃদ্ধিতেঃ এক চা চামচ পুদিনাপাতার রস বা কমলার রস বা এক কাপ রঙ চায়ের সাথে এক চা চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে দিনে তিনবার করে নিয়মিত খেতে হবে তাহলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
হার্টের সমস্যার ক্ষেত্রেঃ কালোজিরার তেল হার্টের রুগীদের জন্য অনেক উপকারি। এক চা চামচ কালোজিরার তেল এবং এক কাপ দুধ প্রতিদিন ২ বার করে খেতে থাকলে হার্টের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যাবে। সাথে কালোজিরার তেল দিয়ে বুকে নিয়মিত মালিশ করতে হবে।
ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতেঃ প্রতিদিন সকালে রসুনের দুটি কোষ চিবিয়ে খেয়ে এবং সমস্ত শরীরে কালোজিরার তেল মালিশ করে সূর্যেরতাপে কমপক্ষে আধা ঘন্টা বসে থাকতে হবে। এবং এক চা-চামচ
কালোজিরার তেল সমপরিমাণ মধুসহ প্রতি সপ্তাহে ২/৩ দিন খেতে হবে ফলে বড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
বুকের দুধ বৃদ্ধি করতেঃ মায়েরা প্রতি রাতে শোয়ার আগে ৫-১০ গ্রাম কালিজিরা মিহি করে দুধের সাথে খেতে থাকতে হবে। মাত্র ১০-১৫ দিনে দুধের প্রবাহ বেড়ে যাবে। কালিজিরা ভর্তা করে ভাতের সাথে খেলেও ভালো হবে। এছাড়া একচা-চামচ কালোজিরার তেল সমপরিমাণ মধুসহ দৈনিক ৩ বার করে নিয়মিত খেতে হবে।
ত্বকের আদ্রতার বাড়াতেঃ শীতকালে ত্বকের আদ্রতার জন্য বডি লোশনের পরিবর্তে শুধু কালোজিরার তেল অথবা জয়তুন (অলিভওয়েল) তেল এর সাথে কালোজিরার তেল মিশিয়ে সারা শরীরে সারা শরীরে মালিশ করতে হবে। যা আপনার বা আপনার শিশুর ত্বকের আদ্রতা ও লাবণ্যময় বৃদ্ধি করবে এবং চর্মরোগের ঝুঁকি কমাবে।