অলৌকিক গাছঃপ্রাকৃতিক চিকিৎসা
চার হাজার বছর ধরে রন্ধন এবং নানা চিকিৎসায় এ গাছের ব্যবহার হয়ে আসছে। ভারতীয় আয়ুর্বেদিক শাস্ত্র মতে, ৩০০ রকমের রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করে এই গাছটি। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পুষ্টিকর হার্ব। তাই একে বলা হয় পুষ্টিগুণে ভরপুর ন্যাচারাল সুপার ফুড। এতোক্ষণে আপনি হয়তো গাছটিকে চিনে ফেলেছন! হ্যাঁ এটা আপনার অতিপরিচিত সজনে গাছ। সজনে একটি সুস্বাদু সবজি। কিন্তু অনেকেই জানি না, সজনের পাতায় রযেছে অসাধারণ সব পুষ্টিগুণ। তাই আজকের আলোচনার বিষয় ‘সজনে পাতা’। কিন্তু তার আগে ‘নিউ বাংলা’ পরিবারে আপনাকে স্বাগতম। যারা পরিবারের সদস্য হয়েছেন তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ। নতুন সদস্য হতে এখুনি সাবস্ক্রাইব করে পাশের বেলআইকনটি ক্লিক করে রাখুন, তাহলে প্রয়োজনীয় সব ভিডিও আপনার কাছে পৌঁছে যাবে সবার আগে।
প্রিয় ভিউয়ার, অনেক গুণ থাকার কারণে সজনে গাছকে মিরাক্যাল ট্রিজ বা অলৌকিক বৃক্ষ বলা হয়ে থাকে। সজনে গাছের বৈজ্ঞানিক নাম মরিংগা ওলেইফেরা (Moringa Oleifera)। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা মনে করেন, সজনের পাতা পুষ্টিগুণের আঁধার। যে বাড়িতে একটি সজনে গাছ আছে তাদের বাড়ী যেন ভিটামিনের ফ্যাক্টরি! অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, এই গাছের প্রতি একগ্রাম পাতায় গাজরের চেয়ে চারগুন বেশি ভিটামিন এ, দুধের চেয়ে ৪ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কলা থেকে ৩ গুণ বেশি পটাসিয়াম, কমলালেবুর চেয়ে সাতগুণ বেশি ভিটামিন সি, ডিমের চেয়ে ২ গুণ বেশি প্রোটিন ও শাকের তুলনায় ২৫গুণ বেশি আয়রন রয়েছে। আরো জেনে অবাক হবেন যে, আফ্রিকার পুষ্টিহীন দেশগুলোতে এই সজনে পাতা ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। এছাড়া গাছটিকে মায়েদের ‘উত্তম বন্ধু’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু করেছে।
বিজ্ঞানীরা পুষ্টির দিক দিয়ে সজনে পাতা -কে ‘পুষ্টির ডিনামাইট’ আখ্যায়িত করে বলেন, এ গাছটিতে এতো পরিমাণ ঔষধিগুণ আছে যে, প্রত্যেক বাড়ির আঙিনায় একটি ‘মাল্টিভিটামিন বৃক্ষ’ থাকা জরুরি। তাই আর দেরি নয় বন্ধুরা, এখন জানবো কোন কোন বিশেষ রোগে সজনে পাতা-ফুল-ফল ওষুধের চেয়ে বেশি কাজ করে।
বহুমূত্র ও কোষ্ঠকাঠিন্য: সজনে পাতার রসে বহুমূত্র রোগ ও সজনের ফুল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
কামশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি: সজনের ফুল দুধের সাথে রান্না করে খেলে কামশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
বাত ও হজমশক্তি: সজনের ফল রান্না করে খেলে গেঁটে বাত ও বদহজম থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
কৃমি ও টিটেনাস : সজনের কচি ফল কৃমি, লিভার, প্যারালাইসিস ও টিটেনাস রোগে খুব বেশি উপকারি।
চুলপড়া ও ডায়বেটিস: চুলপড়া রোগের চিকিৎসায় এবং শরীরে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সজনে পাতা কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
হাঁপানি ও গ্যাস : সজনে ফুলের রস দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে হাঁপানি রোগের বিশেষ উপকার হয় এবং সজনে পাতার রসের সাথে লবণ মিশিয়ে খেতে গ্যাসের সমস্যা দূর হবে।
কুকুরের কামড়ে : সজনে পাতা পেষণ করে তাতে রসুন, হলুদ, লবণ ও গোলমরিচ মিশিয়ে সেবন করলে কুকুরের বিষ ধ্বংস হয়।
শিশু ও মা: এক টেবিল চামচ শুকনা সজনে পাতার গুঁড়া থেকে ১-২ বছরের শিশুদের আমিষ, ক্যালসিয়াম, লৌহ ও ভিটামিন-এ সরবরাহ করে থাকে। এবং দৈনিক ৬ চামচ সজনে পাতার গুঁড়া একটি গর্ভবর্তী বা স্তন্যদাত্রী মায়ের চাহিদার সবটুকু ক্যালসিয়াম ও আয়রন সরবরাহ করতে সক্ষম।
ব্যথা ও ফোলা : শরীরের কোনো স্থানে ব্যথা হলে বা ফুলে গেলে সজনের শিকড় বেটে প্রলেপ দিলে ব্যথা ও ফোলা সেরে যায়। কানের ব্যথায় সজনের শিকড়ের রস খুব উপকারি। সজনের আঠা দুধের সাথে খেলে বা কপালে মালিশ করলে মাথা ব্যথা সেরে যায়। এছাড়া সজনের আঠার প্রলেপ দিলে ফোঁড়া সেরে যায়।